বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৬

মোবাইল হ্যান্ডসেটের আইএমআই নিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে হ্যান্ডসেটের ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল স্টেশন ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি (আইএমআই) নাম্বার নিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। এদিন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম ন্যাশনাল আইএমআই ডেটাবেজ উদ্বোধন করবেন। দেশীয় সফটওয়্যার ডেভেলপারদের তৈরি এই ডেটাবেজ সফটওয়্যারে আমদানিকৃত বা দেশে অ্যাসেম্বেল করা হ্যান্ডসেটের ১৫ ডিজিটের সিরিয়াল নাম্বার নিবন্ধিত থাকবে। নিবন্ধিত নাম্বারটির মাধ্যমে অনলাইনেই হ্যান্ডেসেটটির যাবতীয় তথ্য যাচাই করতে পারবেন বিক্রেতা-ক্রেতাসহ যে কেউ।
*#06#

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে গ্রাহকের পরিচয় ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মোবাইল ফোন আমদানিকারকদের সংগঠন মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমপিএ) এবং টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি যৌথভাবে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবে। বিএমপিএ-এর সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক বলছেন, "এর ফলে হ্যান্ডসেট চুরি কমবে। অপরাধ কমবে। সে সাথে সরকারের আমদানি শুল্কও বাড়বে"। তিনি বলেন, "এতদিন বিটিআরসিতে ম্যানুয়ালি আইএমআই নিবন্ধন করে ছাড়পত্র দেয়া হতো। এই পদ্ধতি চালুর পর তা ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তরিত হবে। পর্যায়ক্রমে এ ডেটাবেজ নিবন্ধনের সঙ্গে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোকেও যুক্ত করা হবে। তখন আইএমইআই ডেটাবেজে কোনো সেট নিবন্ধিত না হলে সেটি কোনো মোবাইল ফোন অপারেটরের নেটওয়ার্কে কাজ করবে না"।
রেজওয়ানুল হক বলেন, "গত ডিসেম্বরে শুরু হওয়া সিমের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন এপ্রিলের মধ্যে শেষ হবে। আর সিমের নিবন্ধনের মাধ্যমে নিরাপত্তার অর্ধেকটা নিশ্চিত হবে। এরপর হ্যান্ডসেটের নিবন্ধন করা গেলে নিরাপত্তার শতভাগ নিশ্চিত হবে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই ডেটাবেজের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন টেস্ট রান চলছে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে ডেটাবেজের সক্ষমতা যাচাই করা হবে। এরপর ৩ ফেব্রুয়ারি টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী এটি উদ্বোধন করবেন"। ডেটাবেজটি চালুর মাধ্যমে সেটের কান্ট্রি লক সিস্টেমও চালু করা সম্ভব হবে বলে জানান রেজওয়ানুল হক। তিনি বলেন, "তবে এই ডেটাবেজে কেবল নতুন করে আমদানিকৃত সেটই নিবন্ধিত হবে। বাজারে থাকা ৭ কোটির মতো সেটের নিবন্ধন অনেকটাই অসম্ভব। আর বছর তিনেকর মধ্যেই এসব সেট বাজার থেকে উধাও হয়ে যাবে। তাই পুরনো সেট নিবন্ধনের বিষয়ে বিএমপিএ নমনীয়"।
রেওয়ানুল হক বলেন, "বর্তমানে প্রতি বছর আড়াই কোটির কিছু বেশি হ্যান্ডসেট আমদানি হয়। বৈধ পথে আমদানি হওয়া সব সেটের নিবন্ধন হলে তখন অবৈধ পথে আমদানি হওয়া সেটের নিয়ন্ত্রণও সম্ভব হবে। তাদের ধারণা বর্তমানে ২০ শতাংশ হ্যান্ডসেট আসে অবৈধ পথে। শুরুতেই এটা ১৫ শতাংশে নেমে আসবে। একসময় শূন্যের কোঠায় চলে আসবে"।
এর আগে গত নভেম্বরে প্রিয়.কমের কাছে একান্ত সাক্ষাৎকারে রেজওয়ানুল হক আইএমআই নাম্বার ব্যবহারের ব্যাপারে সম্ভাব্য কী ধরণের পদক্ষেপ নেওয়া যায় সে ব্যাপারে জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, "আমরা শুধু মোবাইল হ্যান্ডসেট মনিটরিং করতে বলছি না। এ জন্য সেন্ট্রালাইজড সল্যুশন দরকার। বাংলাদেশের প্রতিটি হ্যান্ডসেট কিন্তু আইএমই নাম্বার দিয়ে ট্র্যাক করা সম্ভব। প্রত্যেকটি হ্যান্ডসেটের জন্য বিটিআরসি থেকে আইএমই নাম্বার অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু এই আইএমই নাম্বারের আমাদের কোন সেন্ট্রালাইজড সার্ভার নেই। বিটিআরসির কাছে ডেটা আছে কিন্তু কাস্টম যখন এটা চেক করছে তখন তার কাছে কিন্তু কোন ডেটাবেজ বা সার্ভার থাকছে না। এমন কি অপারেটরদের কাছেও আইএমই নাম্বারের কোন ডেটাবেজ নেই; যেটি দেখে অপারেটর হ্যান্ডসেট ব্যবহার করার জন্য পার্মিশন দেবে"।
তিনি আরও জানিয়েছিলেন, "একজন সাধারণ গ্রাহক মার্কেট থেকে হ্যান্ডসেট কিনে তাঁর আইএমই নাম্বার চেক করতে পারছেন না। গ্রাহক জানতেও পারছেন না এই আইএমই নাম্বার কবে ইম্পোর্ট হয়েছে, কে ইম্পোর্ট করেছে এবং বিটিআরসি কবে পার্মিশন দিয়েছে। আমরা বলছি, বিটিআরসি সেন্ট্রালাইজড ডেটাবেজ করলে তখন কেউ অনুমতি নিলে সেই আইএমই নাম্বার সার্ভারে থাকবে এবং সেই সার্ভারটি কাস্টমস, মোবাইল অপারেটর ও গ্রাহক চেক করতে পারবে। অনেক সময় গ্রাহক শর্টকোড দিয়ে অনেক সার্ভিস গ্রহণ করে সেভাবে সে শর্টকোড দিয়ে আইএমই-এর ডেটা চেক করতে পারবে। এর রিপ্লাইয়ে তাঁকে জানানো হবে যে এই আইএমই নাম্বার বৈধ এবং এটার অনুমোদন দেওয়ার তারিখও জানাবে। এভাবে মনিটরিং করতে পারলে দেশে গ্রে মার্কেটের সংখ্যা অনেক কমে যাবে। বিটিআরসি চাইলে এ ব্যাপারে আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি"।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন